অস্ত্রের পাহাড়ে বিজিবির দুঃসাহসিক অভিযান: উখিয়ার রঙ্গিখালী পাহাড়ে ডাকাত আস্তানা উচ্ছেদ।
উখিয়া, কক্সবাজার –
অন্ধকারে ঢাকা গহীন পাহাড়ে যখন সাধারণ মানুষের পা ফেলতেও দ্বিধা, তখন ঠিক সেইখানে মৃত্যুকে উপেক্ষা করে অভিযান চালালো বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বিজিবি ৬৪ ব্যাটালিয়নের এক সাহসী অভিযানে উখিয়ার টেকনাফের রঙ্গিখালী পাহাড় থেকে উদ্ধার হলো বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ—যা কোনো সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়।
বিজিবির উখিয়া ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে ব্যাটালিয়ন সদর ও হ্নীলা বিওপির একটি যৌথ আভিযানিক দল গভীর রাতে গহীন রঙ্গিখালী পাহাড়ে হানা দেয়। লক্ষ্য—ডাকাতদলের গোপন আস্তানা। দীর্ঘ অনুসন্ধান ও গোয়েন্দা নজরদারির পর চালানো এই অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়—
একটি বিদেশি রিভলভার ও ২১ রাউন্ড গুলি
একটি একনলা গাদা বন্দুক, ৩ রাউন্ড গুলি ও ৫টি খালি খোসা।
একটি এলজি গান।
একটি ওয়ান শ্যুটার পিস্তল।
১৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি।
একটি লম্বা বডির কিরিচ।
দুটি লম্বা বডির রামদা।
এত বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার যে শুধু একটি ডাকাতচক্রের ছিল, তা ভাবা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সুসংগঠিত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অংশ, যারা সীমান্ত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল।
এ অভিযান বিজিবির দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন। সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় বিজিবি যেভাবে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিরে এসেছে স্বস্তি এবং আস্থা।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—এত বিপুল অস্ত্র পাহাড়ি অঞ্চলে কীভাবে এলো? কারা এই চক্রের পেছনে কাজ করছে? কে বা কারা তাদের মদতদাতা?
এই অভিযান শুধু একটি দুষ্কৃতিকারী ঘাঁটি ধ্বংস করেই শেষ নয়, বরং এটি নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়গুলো নিয়ে।
অবশ্যই এই অভিযান একটি বার্তা—বাংলাদেশের সীমান্তে সন্ত্রাস ও অস্ত্রের কোনো স্থান নেই। এবং বিজিবি সদা প্রস্তুত সেই সত্যকে বারবার প্রমাণ করতে।