বিজিবি'র ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের শপথ: সীমান্তের নতুন রক্ষীরা দায়িত্বে!
চট্টগ্রাম, সাতকানিয়া থেকে:
সীমান্ত নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে খ্যাত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর নবীন সৈনিকদের জীবনযাত্রার এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। বিজিবির ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি)-এর বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে।
আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি নবীন সৈনিকদের অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং সীমান্ত সুরক্ষায় তাদের প্রতি আশা-আকাঙ্ক্ষার বার্তা পৌঁছে দেন।
শপথে দীপ্ত প্রতিজ্ঞা, দায়িত্বে দৃঢ় প্রত্যয়।
সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে সশস্ত্র সালামের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে ৬৯৪ জন নবীন সৈনিক—যার মধ্যে ৩৬ জন নারী—সফলভাবে ২৪ সপ্তাহের কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে সশ্রদ্ধ শপথ গ্রহণ করেন। এই আয়োজনে উচ্চারণ করা হয় দায়িত্ব, শৃঙ্খলা, সততা ও সাহসিকতার প্রতিশ্রুতি।
ঐতিহাসিক স্মরণ ও বাস্তবতার প্রতিফলন।
ভাষণে বিজিবি মহাপরিচালক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইপিআর সদস্যদের স্মরণ করেন, পাশাপাশি ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, “বিজিবি কেবল সীমান্তের প্রহরী নয়—এটি দেশের অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার অদম্য প্রতীক।”
নারী সৈনিকদের গর্বিত অগ্রযাত্রা।
অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক বিশেষভাবে নারী সৈনিকদের উল্লেখ করে বলেন, “নারীরা এখন দেশের প্রতিটি স্তরে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করছে। বিজিবির নারীরাও শক্ত হাতে ধরছে দেশের নিরাপত্তার হাল। তারা বাহিনীর গর্ব হয়ে উঠবে।”
আহ্বান: সততা ও সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের।
নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে মহাপরিচালক বলেন, “শৃঙ্খলা সৈনিক জীবনের অলংকার। প্রতিপক্ষ বাহিনীর কাছে কখনো নমনীয় হওয়া যাবে না। দেশের এক ইঞ্চি মাটিও যেন হাতছাড়া না হয়।” তিনি সততা, আনুগত্য ও পেশাগত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানান।
বিজয়ী চেতনায় পদার্পণ।
অনুষ্ঠানে চৌকস কুচকাওয়াজ, ট্রিক ড্রিল এবং ব্যান্ড ডিসপ্লে ছিল দর্শনার্থীদের জন্য এক মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা। সেরা রিক্রুট হিসেবে বক্ষ নম্বর-৫৭৪ সাইফ মিয়া সম্মাননা অর্জন করেন। প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি উদযাপন করে বিজিবির এই নবীন যোদ্ধারা নিজেদের দেশসেবায় উৎসর্গ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।