Top News

ওটিপি ফাঁদে ৮.৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র, মূলহোতা রুহুল আমিন গ্রেফতার।

 


ব্যাংকের পরিচয়ে ওটিপি সংগ্রহ করে ৮.৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের হোতা গ্রেফতার।

 রিপোর্টার ডেস্ক | নবজাগরণ.

ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারের পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর এক প্রতারণা চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রযুক্তি নির্ভর এই প্রতারক চক্রের শিকার হয়েছেন বহু সাধারণ গ্রাহক—তাদের মধ্যে একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একসঙ্গে প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়, শুধুমাত্র একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) সংগ্রহ করে।

সিআইডি সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি রুহুল আমিন (৪২), পিতা সেখ তারা মিয়া, মাতা আমেরুন্নেসা, বাড়ি ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসনের খালাসীডাঙ্গী গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে রুহুল ও তার চক্র পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষের মোবাইলে কল দিয়ে নিজেদের ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দিত এবং ব্যাংকে টাকা জমা হবে—এমন প্রলোভন দেখিয়ে ওটিপি সংগ্রহ করত। এই ওটিপির মাধ্যমেই মুহূর্তের মধ্যে একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে আত্মসাৎ করা হতো।

ঢাকার এক ব্যবসায়ী এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে ভুক্তভোগী হন। ২৪ মার্চ ২০২৫ বিকেলে মগবাজার মোড়ে অবস্থানকালে তার মোবাইলে একটি কল আসে। অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে তার ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে জানায়, তার অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা জমা হবে এবং এর জন্য একটি ওটিপি পাঠানো হবে, যা তাদের জানাতে হবে। সরল বিশ্বাসে ভুক্তভোগী ওটিপি শেয়ার করলে শুরু হয় বিপত্তি—মাত্র কয়েক মিনিটেই বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৮,৪০,০০০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

ঘটনার পরপরই রমনা মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা (নং-১৪, তারিখ: ২৫/০৩/২০২৫) দায়ের করা হয়। ধারা ছিল—দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৬, ৪১৯ ও ৪২০। মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করে সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ ইউনিট।

প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন সূত্রে তথ্য পেয়ে ৪ জুন সকাল ৯টায় ফরিদপুর জেলা পুলিশের সহায়তায় মূল অভিযুক্ত রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সিআইডি জানিয়েছে, এই চক্রটি একটি গোছানো সিন্ডিকেট হিসেবে কাজ করে এবং তাদের আরও সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

 প্রতারণার ধরন নতুন হলেও ফাঁদ সেই পুরনো।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো—প্রতারণার পদ্ধতি যতই আধুনিক হোক না কেন, তার মূল অস্ত্র মানুষের সহজ-সরল বিশ্বাস। ব্যস্ত জীবনের মাঝে এমন একটি কল আসলে অনেকেই যাচাই না করেই তথ্য দিয়ে দেন, যার ভয়াবহ মূল্য দিতে হয় অর্থনৈতিকভাবে।

 কীভাবে সতর্ক হবেন আপনি?

কোনো অচেনা নম্বর থেকে কল এলে ব্যক্তিগত বা ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য কখনোই শেয়ার করবেন না।

ওটিপি, পিন, পাসওয়ার্ড কখনো কাউকে বলবেন না—even if they claim to be from the ban. 

সন্দেহ হলে সরাসরি আপনার ব্যাংকের অফিসিয়াল হেল্পলাইনে কল করুন।

প্রতারণার শিকার হলে দেরি না করে নিকটস্থ থানায় বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ করুন।

 এই ঘটনা শুধু একটি মামলা নয়, এটি একটি সতর্কবার্তা—প্রযুক্তির দুনিয়ায় নিরাপত্তার চাবিকাঠি এখন আপনার নিজের হাতে।

নবীনতর পূর্বতন