📰 আলেম সমাজ: নতুন বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য পথপ্রদর্শক?
নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে আমরা এমন এক সমাজ গড়তে চাই, যেখানে কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না—না চিন্তায়, না সম্ভাবনায়। ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে আবার আলোচনায় উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক শক্তি—আলেম সমাজ। তারা শুধু ধর্মীয় নেতৃত্ব নয়, বরং সমাজ গঠনে হতে পারেন এক নতুন যুগের নায়ক।
সাতচল্লিশের স্বাধীনতা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, কিংবা চব্বিশের গণআন্দোলন—প্রতিটি সংকটের মুহূর্তে আলেমরা ছিলেন জাতির পথপ্রদর্শক। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ধর্মীয় মূল্যবোধ আর দেশপ্রেম যখন এক হয়ে যায়, তখন পরিবর্তন আসে শিকড় থেকে।
আজ যখন বাংলাদেশ নতুন এক দিশা খুঁজছে—শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতির মত প্রধান খাতে—আলেমদের সম্পৃক্ততা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। তাদের রয়েছে গ্রামীণ সমাজব্যবস্থার সঙ্গে অটুট সংযোগ, রয়েছে নৈতিক নেতৃত্বের প্রতি মানুষের অগাধ আস্থা।
বিশ্ববাজারে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে, যেখানে আরবী ভাষা ও ইসলামি সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক—সেখানে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক আলেম অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারতেন। অথচ সেই সম্ভাবনার বড় অংশই এখনো অনাদরে পড়ে আছে।
এই জনগোষ্ঠীর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও ভাষাগত সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করা সম্ভব।
সম্প্রতি “জুলাই পদযাত্রা”-তে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে মানুষের মনের কথা শোনার যে প্রচেষ্টা চলছে, সেখানেও এক নতুন প্রত্যয় ধ্বনিত হচ্ছে—সমন্বয়ের রাজনীতি। ইশতেহারে ঠাঁই পাচ্ছেন আলেম, নারী, শ্রমিক, দিনমজুর—সমাজের সেই সব গোষ্ঠী, যারা এতদিন থাকতেন প্রান্তে।
এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি কেবল রাজনৈতিক কৌশল নয়—এটি হতে পারে জাতীয় পুনর্জাগরণের সূচনা। এক নতুন বাংলাদেশ, যেখানে ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃত্ব মিলেমিশে গড়ে তুলবে একটি নৈতিক, মানবিক ও টেকসই রাষ্ট্রব্যবস্থা।
সত্যিই, সময় এসেছে পুরোনো কাঠামো ভেঙে আলোকিত পথ গড়ার। প্রশ্ন শুধু একটাই—আমরা কি প্রস্তুত সেই পরিবর্তনের জন্য?