পরিবেশ বাঁচিয়ে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরির তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার।
ঢাকা, ২ নভেম্বর ২০২৫: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে সড়ক, রেল, বিমান ও নৌপথের সমন্বিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে আনার ওপর জোর দেন, অন্যথায় তা অর্থনীতির জন্য ‘গলার ফাঁস’ হতে পারে।
আজ (রবিবার) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় "সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অব বাংলাদেশ" সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।
নদী ও পরিবেশ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে পরিবেশের ক্ষতির বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, "আমাদেরকে এই কাজটা করতে হবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে। নদীর ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না, পানিকে শান্ত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, পানি আমাদের জন্য বিরাট সম্পদ।"
তিনি বলেন, "আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই হযবরল অবস্থায় রয়েছে, এটাকে দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে আনা না গেলে পুরো ব্যবস্থাটা অর্থনীতির জন্য গলার ফাঁসে পরিণত হবে।" ইউনূস অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে মাথায় রেখে অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
সমন্বিত কৌশলগত পরিকল্পনা পেশ
বৈঠকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি প্রাথমিক কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। এই পরিকল্পনায় দেশের বিদ্যমান রেলপথ, নৌপথ এবং সড়কপথের যথাযথ ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলায় আনার ধারণা দেওয়া হয়।
পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এটিকে বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
বিশেষজ্ঞদের মতামত ও কর্মপরিকল্পনা
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি সামষ্টিক মডেল দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে করে এটি দেশের অর্থনৈতিক লাইফলাইন গড়ে তুলতে পারে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ যেসব ক্ষেত্রে ছোট সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে পুরো অঞ্চলকে জাতীয় যোগাযোগের আওতায় আনা সম্ভব, সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত পরিকল্পনা প্রণয়নের কথা বলেন। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, আরও পরিকল্পিত কাজ করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি প্ল্যানার্স উইং গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালু হবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বন্দরগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ যেন সহজ ও কার্যকর হয়, সে বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
