কক্ষপথে সংঘর্ষ এড়াতে নাসার সঙ্গে যোগাযোগ করলো চীন, মহাকাশে নজিরবিহীন সমন্বয়।

 


​সিডনি/ঢাকা, ৯ নভেম্বর, ২০২৫: কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কৌশলগত সমন্বয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার (NASA) সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছে চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (CNSA)। মহাকাশ ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুই সংস্থার মধ্যে সরাসরি সমন্বয়ের এই ঘটনাকে অভূতপূর্ব সহযোগিতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

​গত ২ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল কংগ্রেস (IAC)-এর এক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এই ঘটনাটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। কক্ষপথে ক্রমবর্ধমান স্যাটেলাইট ও যানজটের মধ্যে মহাকাশের নিরাপত্তা রক্ষায় এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

​ মহাকাশে বাড়ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘর্ষের ঝুঁকি.

​মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্সের স্টারলিংক এবং চীনের সাংহাই স্পেসসেইল টেকনোলজিসের কিয়ানফান কনস্টেলেশনের মাধ্যমে পৃথিবীর শীর্ষ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ মহাকাশেও তাদের উপস্থিতি জোরদার করছে। ইতোমধ্যে উভয় সংস্থা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে হাজার হাজার স্যাটেলাইট স্থাপন করেছে।

​এই ব্যাপক সংখ্যক স্যাটেলাইটের উপস্থিতি কক্ষপথে সংঘর্ষের ঝুঁকিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে, যা একটি কার্যকর মহাকাশ ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি করেছে।

​ নিরাপত্তা নিয়ে চীনের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন.

​বিশ্লেষকদের মতে, কক্ষপথে সংঘর্ষ এড়াতে চীনের এই যোগাযোগ মহাকাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতার প্রতি দেশটির দৃষ্টিভঙ্গির একটি বড় পরিবর্তনকে তুলে ধরে। এটি চীনের ২০২২ সালের মহাকাশ সম্পর্কিত শ্বেতপত্রে বর্ণিত প্রস্তাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

​ওই শ্বেতপত্রে ২০২৬ সালের মধ্যে কক্ষপথের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং মহাকাশ থেকে ধ্বংসাবশেষ অপসারণের জন্য প্রযুক্তি বিকাশের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল।

​ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন সত্ত্বেও নতুন সম্পর্কের ইঙ্গিত.

​যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'উলফ অ্যামেন্ডমেন্ট' নাসা ও চীনের বেশিরভাগ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সীমাবদ্ধ করে রেখেছে, তবুও এই ঘটনা একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। চীনের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন থাকা সত্ত্বেও, পৃথিবীর কক্ষপথকে নিরাপদ রাখার মতো চ্যালেঞ্জ দুটি শক্তিশালী মহাকাশ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একটি নতুন ও বাস্তবসম্মত সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে।

​কক্ষপথের নিরাপত্তা রক্ষায় এই ধরনের অরবিটাল কোঅপারেশন ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Previous Post Next Post