Top News

ইতালির প্রশংসা ও প্রস্তাব: আরও বাংলাদেশি চাই, নিরাপদ পথে।

 


ইতালির নতুন বার্তা: বৈধ পথে আরও বাংলাদেশিকে নিয়োগে আগ্রহী রোম, মানবপাচার রুখতে যৌথ উদ্যোগের প্রস্তাব।

নবজাগরণ ডেস্ক | ঢাকা, ৫ মে ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি কর্মী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইতালি। পাশাপাশি, মানবপাচার রোধ এবং নিরাপদ অভিবাসনের জন্য নতুন ধরনের সহযোগিতামূলক নীতির প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপের এই গুরুত্বপূর্ণ দেশটি। সোমবার ঢাকায় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এমন বার্তা দিয়েছেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোজি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিয়ান্তেদোজি রাজধানীর স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন। এসময় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর মধ্যে প্রাধান্য পায় নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন, মানবপাচার প্রতিরোধ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

ইতালির মন্ত্রীর ভাষায়, “আমাদের দেশে একটি চমৎকার বাংলাদেশি কমিউনিটি রয়েছে। তারা পরিশ্রমী, তরুণ, এবং ইতালিয়ান সমাজে দারুণভাবে একীভূত হয়েছে। আমরা আরও বাংলাদেশিকে বৈধ পথে নিয়ে যেতে চাই।”

তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন, অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ পথে ইতালিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন, যা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। “অবৈধ পথে সাগর পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা ইতালির জন্য অত্যন্ত সমস্যাজনক,” বলেন মন্ত্রী, “আমরা চাই যারা বৈধ কাঠামোর মধ্যে থেকে আসবে।”

সাক্ষাতে তিনি আরও জানান, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি আগামী সেপ্টেম্বরের আগে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নতুনভাবে ‘পুনর্নবীকরণ’ ও ‘পুনরুজ্জীবিত’ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ইতালির এ আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশও চায় মানবপাচার বন্ধ হোক, অভিবাসন হোক নিরাপদ ও নিয়মতান্ত্রিক। যারা অবৈধ পথে পাড়ি জমায়, তারাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়।”

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক একটি চক্র সরলপ্রাণ মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে, এবং এই চক্রগুলোর বিরুদ্ধেই যৌথভাবে কাজ করা জরুরি। “প্রবাসীরা কখনও মানবপাচারের লাভবান পক্ষ নয়, বরং তারাই সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী,” বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আগের বৈঠকের কথা। উভয় দেশ তখনও এই ইস্যুতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছিল।



বিশ্লেষণ:

এই বৈঠক শুধু দুই দেশের মধ্যে অভিবাসননীতি নিয়েই নয়, বরং বৈশ্বিক অভিবাসন কাঠামোয় ন্যায়সংগত এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির দাবি জানায়। বাংলাদেশি তরুণদের বৈধভাবে কর্মসংস্থানে সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি মানবপাচারের মতো জঘন্য অপরাধ ঠেকাতে এ ধরনের বৈঠক যুগান্তকারী হতে পারে।

শেষ কথা:


বাংলাদেশ ও ইতালির এ সংলাপ যেন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং বাস্তবায়নে গতি পায়—এটাই এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রধান আকাঙ্ক্ষা। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বলা যায়, নিরাপদ অভিবাসনের সেতুবন্ধনের এই প্রয়াস মানবিকতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।


নবজাগরণ

নবীনতর পূর্বতন