১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে ৭০% সফলতা: কারা পেলেন সনদ, কারা থাকলেন পিছিয়ে?

 

চট্টগ্রামে জামায়াতের শিক্ষা শিবির: আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয়ে নেতৃত্বের প্রত্যাশা।

নবজাগরণ ডেস্ক | ৩০ মে ২০২৫

চট্টগ্রাম মহানগরীতে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রুকনদের জন্য আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা শিবির, যেখানে দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা নতুন প্রজন্মকে আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখালেন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গতি আনতে এবং ইসলামভিত্তিক সমাজব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার আহ্বানে মুখর ছিল পুরো অনুষ্ঠানটি।

শুক্রবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটের আর বি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, "বাংলাদেশে জনকল্যাণমুখী ও স্বনির্ভর এক আদর্শ রাষ্ট্র গড়াই আমাদের লক্ষ্য। আমরা চাই সমাজের সর্বস্তরে সৎ, যোগ্য ও আস্থাশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে।"

ডা. তাহের তার বক্তব্যে সমাজ পরিবর্তনের জন্য নীতিনিষ্ঠ শিক্ষা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং পরিবারকেন্দ্রিক ইসলামী মূল্যবোধের বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, "শুধু স্লোগান নয়—আমাদের দরকার পরিকল্পিত, দায়িত্বশীল নেতৃত্ব। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নারীর মর্যাদা বাড়বে, সমাজে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দেশের মানুষ পাবে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।"

এ সময় তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও সরব হন। শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থাকে স্বৈরতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন যে, তার নেতৃত্বে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র উপেক্ষিত হয়েছে। জামায়াত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কার নিশ্চিত করতে চায় বলেও তিনি জোর দেন।

শিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, "খেলাফত কেবল নামাজ-রোজার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি দায়িত্ব, একটি আন্দোলন। চাই বিশ্বাস, শৃঙ্খলা ও আত্মত্যাগের মানসিকতা।" তিনি ব্যক্তি ও সমাজজীবনে ইসলামী আচরণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সত্যিকার ইসলামী সমাজ গঠনের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন। দারসুল কুরআন পেশ করেন মাওলানা খাইরুল বাশার।

শিক্ষা শিবিরে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এবং একাধিক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীসহ বিশিষ্ট আলেম, শিক্ষক, চিকিৎসক ও সমাজসেবীরা।

অনুষ্ঠানের সারাংশে ফুটে ওঠে এক নতুন ভাবনার আহ্বান—একটি নীতিনিষ্ঠ, ইসলামী মূল্যবোধে গঠিত রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়। সমাজকে বদলাতে হলে চাই চিন্তার বিপ্লব এবং নেতৃত্বে আত্মশুদ্ধি—এমনটাই বার্তা দিয়ে শেষ হয় দিনব্যাপী এ শিক্ষা শিবির।