Top News

ভাসানচরের ঢেউয়ে হারিয়ে গেল পাথরবোঝাই জাহাজ, ১২ নাবিককে বাঁচালেন জেলেরা।

 


ভাসানচরের ঢেউয়ে ডুবে গেল ৮৫০ টন পাথরবোঝাই জাহাজ, ১২ নাবিককে উদ্ধার করলেন জেলেরা।

নোয়াখালীর উপকূলে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মুখে হারিয়ে গেল এক লাইটার জাহাজ—সেই সঙ্গে মুহূর্তে বদলে গেল ১২ জন নাবিকের জীবনের গল্প। তবে এক মর্মস্পর্শী মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তাদের প্রাণ ফিরিয়ে আনলেন স্থানীয় জেলেরা।

রবিবার (১৮ মে) দুপুরে ভাসানচরের অদূরে সাগরপৃষ্ঠে ডুবে যায় চুনাপাথরবোঝাই "এমভি ইয়া এলাহি" নামের একটি লাইটার জাহাজ। চট্টগ্রাম থেকে মোংলা বন্দরে যাওয়ার পথে গভীর সাগরের প্রচণ্ড ঢেউয়ে জাহাজটির নিচের অংশ ফেটে গেলে মুহূর্তেই তা পানিতে তলিয়ে যায়। ওই সময় onboard থাকা ১২ জন নাবিক ছিলেন প্রবল ঝুঁকিতে।

তবে ভাগ্য তাদের একেবারে নিরাশ করেনি। কাছাকাছি অবস্থানরত একটি মাছ ধরার ট্রলারের জেলেরা বিপদের সংকেত পেয়ে দ্রুত এগিয়ে আসেন এবং এক অনন্য সাহসিকতায় তাদের সবাইকে উদ্ধার করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালক মো. সবুর খান। তিনি জানান, “জাহাজটি চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান—মেসার্স জাগুয়া ট্রেডার্সের মালিকানাধীন ছিল এবং এতে ছিল প্রায় ৮৫০ টন চুনাপাথর। গভীর সাগরে ভাসানচরের কাছে পৌঁছালে ঢেউয়ের আঘাতে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ডুবে যায়।”

এই ঘটনাটি শুধু একটি জাহাজডুবির খবর নয়; এটি একদিকে যেমন বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন খাতের ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তবতার প্রতিফলন, অন্যদিকে তেমনি মানবিকতা, সাহস ও সাগরপাড়ের জীবনসংগ্রামের এক জীবন্ত চিত্র।

প্রতিদিন এমন অনেক জাহাজই যাত্রা করে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, কিন্তু সামান্য এক প্রযুক্তিগত ত্রুটি কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের সলিল সমাধিতে ঠেলে দিতে পারে। প্রশ্ন থেকে যায়—এই দুর্ঘটনা কি ছিল শুধু দুর্ভাগ্য, নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

এখন সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার—সমুদ্রযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কতটা প্রস্তুত? এবং যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব পরিবহনে কাজ করছেন, তাদের জন্য কী ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা উচিত?

নবীনতর পূর্বতন