Top News

লালপুরের কদিমচিলানে সড়কে রক্তাক্ত দৃশ্য, তিন তরুণের মৃত্যু: নবজাগরণ নাটোর :

 ২১ জানুয়ারি ২০২৫ :


নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের সেকচিলান নামক স্থানে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা পুরো এলাকাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পাবনা-ঢাকা সড়কের ব্যস্ততম পথে একটি দ্রুতগামী ট্রাকের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন তিন তরুণ, যাদের বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।


নিহতদের পরিচয়


দুর্ঘটনায় নিহত তরুণরা হলেন লালপুর উপজেলার ধলা হিন্দুপাড়া গ্রামের শিবেন মজুমদারের ছেলে শ্রাবণ মজুমদার (বয়স ১৮), রতন সরকারের ছেলে স্বপন (বয়স ১৯), এবং সিংড়া উপজেলার সোনাইডাঙ্গা গ্রামের বিষ্ণু সরকারের ছেলে বিধান সরকার (বয়স ১৮)। তাদের অকাল মৃত্যু পরিবারের পাশাপাশি পুরো এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে।


ঘটনার বিবরণ


প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, তিন তরুণ একটি মোটরসাইকেলে করে ধলা হিন্দুপাড়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। সকালটা ছিল রোদ্রোজ্জ্বল এবং চারপাশে ছিল কর্মব্যস্ত পরিবেশ। কিন্তু হঠাৎ সেকচিলান এলাকায় তাদের মোটরসাইকেলের বিপরীতে দ্রুতগামী একটি ট্রাক এসে সজোরে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষের তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই শ্রাবণ ও বিধানের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত স্বপনকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও পথেই তার মৃত্যু ঘটে।


ঘটনার পর ট্রাকটি রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে থাকলেও চালক দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এই হঠাৎ দুর্ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজন হতভম্ব হয়ে পড়ে এবং দ্রুত উদ্ধার কাজে নামেন।


পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া


লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছি। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ নির্ণয়ে কাজ চলছে এবং দায়ী ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার ও সমাজ


মাত্র ১৮ বছর বয়সের এই তরুণরা তাদের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময় পার করছিলেন। তারা ছিলেন পরিবারের স্বপ্নের প্রতীক। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা তাদের স্বপ্নগুলো নিমিষেই শেষ করে দিল। নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা শোকের সাগরে ভাসছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই দুর্ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।


নিরাপদ সড়কের জন্য আহ্বান


এই দুর্ঘটনা আবারও আমাদের সামনে সড়ক নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন, যা শুধু তাদের পরিবার নয়, পুরো সমাজের জন্যই এক অপূরণীয় ক্ষতি। প্রশাসন, সড়ক কর্তৃপক্ষ, এবং নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগে নিরাপদ সড়ক গড়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার এখনই সময়।


এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

নবীনতর পূর্বতন