ঢাকা, নবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী: দুদকের তিনটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান উদঘাটন করল অনিয়ম ও দুর্নীতি।
দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট আজ, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, তিনটি বড়ো অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানগুলোর লক্ষ্য ছিল সরকারি প্রকল্প ও সেবার ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।
অভিযান ১: নবাবগঞ্জ, ঢাকা
নবাবগঞ্জের বান্দুরা এলাকায় ইছামতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন ২৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের জেলা কার্যালয়, ঢাকা-২ হতে একটি অভিযান পরিচালিত হয়। টিম প্রথমে এলজিইডি, ঢাকা, আগারগাঁও অফিসে গিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র যাচাই করে। এরপর সরেজমিনে ব্রিজ নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করা হয়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ৯টি স্প্যানের মধ্যে ৮টি স্প্যান নির্মাণ সম্পন্ন হলেও মূল আর্চ স্প্যানের কাজ এখনও বাকি। অথচ অফিসে সংরক্ষিত নথিতে অগ্রগতি ৯৫% দেখিয়ে প্রায় ৫০.৮৪ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি প্রমাণ করছে যে বিল পরিশোধ এবং প্রকৃত কাজের অগ্রগতির মধ্যে বৈষম্য রয়েছে।
অভিযান ২: গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা
রাজধানীর মিরপুরে গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পে অতিরিক্ত বিল পরিশোধের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি অভিযান পরিচালিত হয়। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ভবনের মাত্র দুইটি ফ্লোর সম্পন্ন, অথচ চারটি ফ্লোরের নির্মাণ বিল ঠিকাদারকে প্রদান করা হয়েছে। আংশিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট তথ্যের জন্য চাহিদাপত্র প্রদান করা হয়েছে।
অভিযান ৩: সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নোয়াখালী
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। টিম ছদ্মবেশে হাসপাতালের সেবা পর্যবেক্ষণ করে। দেখা যায়, সরকারি ওষুধ যথেষ্ট থাকলেও রোগীদের তা সরবরাহ করা হচ্ছে না, রান্না করা খাবারের ওজন নির্ধারিত ৯০ গ্রামের বদলে ৪০-৫০ গ্রাম দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওষুধের মজুদের তালিকা হালনাগাদ করে জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই অনিয়ম রোগীদের আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বর্তমান অবস্থা ও পদক্ষেপ
তিনটি অভিযানের তথ্যাবলি সংগ্রহ শেষে দুদক কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মানবিক ক্ষতি বা আঘাতের কোনো ঘটনা জানা যায়নি, তবে সম্পদের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ক্ষতি এবং আর্থিক অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এই অভিযানগুলো সরকারি প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জনসেবার মান নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।