বাংলাদেশে আসছে এআই–ন্যানোপ্রযুক্তির নতুন যুগ: বুয়েটে আইএফটি প্রতিষ্ঠা। নবজাগরণ নিউজ!



 ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ — দেশের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ঘাটতি পূরণে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মধ্যে ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি (আইএফটি) প্রতিষ্ঠার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সমঝোতা সম্পন্ন হয়।

শিল্প ও একাডেমিয়ার দূরত্ব ঘোচাতে বড় উদ্যোগ

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাত ও একাডেমিয়ার মধ্যে এখনও সুস্পষ্ট ফারাক রয়ে গেছে। গবেষণার ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে দেশের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। এই ফাঁক পূরণে আইএফটি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও জানান, চর এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে দক্ষ জনবল, গবেষক ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো মবিলাইজ করা কঠিন হতো। তাই বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে নতুন জমি অধিগ্রহণ বা স্থাপত্য নকশায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না।

দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিশেষ পরিকল্পনা

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দুই বছরের মধ্যে আইএফটির অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তী দুই বছরে একাডেমিক কার্যক্রম ও কোর্স পরিচালনায় উৎকর্ষ নিশ্চিত করে চার বছরের মধ্যে প্রকল্পকে পূর্ণতা দেওয়া হবে। এই সময়ে বিদেশ ফেরত শিক্ষক ও শিল্পখাতের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে। প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর বাইরে এই মডেল বাংলাদেশের স্কিল গ্যাপ ঘোচাতে নতুন দিগন্ত খুলবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বুয়েটের অভিজ্ঞতা ও সম্ভাবনা

বুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান উদ্যোগটিকে সময়োপযোগী ও যৌক্তিক বলে অভিহিত করেন। তিনি মনে করেন, বুয়েটের দীর্ঘ গবেষণা ও প্রকৌশল অভিজ্ঞতা এই প্রতিষ্ঠানের দ্রুত সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ফ্রন্টিয়ার প্রযুক্তি দ্রুত পরিবর্তনশীল, তাই বাজারচাহিদা অনুযায়ী একটি গতিশীল ও নমনীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার কেন্দ্র

ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, সাইবার সিকিউরিটি, ব্লকচেইন, ন্যানোপ্রযুক্তি, নিউরো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, ডেটা সায়েন্সসহ সর্বাধুনিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে। পাশাপাশি উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ইনোভেশন ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার ওপরও জোর দেওয়া হবে।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিরুল ইসলাম এবং প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মনসুর আলমসহ বুয়েট ও হাইটেক পার্কের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই সমঝোতা দেশের উচ্চশিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের মধ্যে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করল, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ও উদ্ভাবনের পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।


শিশুসহ নিহত ২২ জন! নেপালে ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তাক্ত বিক্ষোভ।

Previous Post Next Post