ধর্মের বিভেদ নয়, মানবতার ঐক্যই হোক নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি" — ডা. শফিকুর রহমান।
নবজাগরণ প্রতিবেদক |
এক বৈচিত্র্যপূর্ণ বাংলাদেশের স্বপ্ন চোখে নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক অসাধারণ ও হৃদয়স্পর্শী মতবিনিময় সভা, যেখানে ধর্ম, বিশ্বাস ও পরিচয়—সবকিছুকে ছাপিয়ে উঠে এসেছে একটি শক্তিশালী বার্তা: “এই দেশ সবার, এ দেশ গড়তে হবে একসাথে”।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এদিন তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—চার ধর্মের মানুষ মিলেই বাংলাদেশ। এই বৈচিত্র্যই আমাদের সৌন্দর্য, এই সম্মিলনেই আমাদের ভবিষ্যৎ।” তিনি আরও জানান, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, মর্যাদাসম্পন্ন বাংলাদেশ গড়াই তার সংগঠনের লক্ষ্য।
সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট ভাষায় অতীতের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “৫ আগস্টের আগে আমাদের স্বাভাবিক জীবন ছিল না। সমাজ থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল—অন্যায়ভাবে, অমানবিকভাবে।”
তবে আলোচনার সবচেয়ে হৃদয়গ্রাহী মুহূর্ত আসে যখন তিনি বরগুনার একটি নিপীড়িত পরিবারের গল্প শোনান। পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুকন্যার উপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা এবং তার বাবার নির্মম হত্যাকাণ্ড তুলে ধরে ডা. শফিক বলেন, “সেই পরিবারের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। আমরা গিয়েছি, পাশে দাঁড়িয়েছি, বাচ্চাটির দায়িত্ব নিয়েছি। মানবিক মূল্যবোধই আমাদের চালনা করে।”
সভায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সব ধর্মাবলম্বীদের এই মিলনমেলায় দেখা গেছে সৌহার্দ্য, শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সহমর্মিতার এক অনন্য পরিবেশ।
অনুষ্ঠান শেষে আমীরে জামায়াত সবার সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। একজন রাজনীতিকের মানবিক মুখচ্ছবি দেখে উপস্থিত অনেকেই আবেগাপ্লুত হন।
ডা. শফিকুর রহমানের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে এক স্বপ্ন—একটি বাংলাদেশ, যেখানে বিভেদের দেয়াল নয়, বরং ভালোবাসা, সহানুভূতি ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতেই গড়ে উঠবে নতুন অধ্যায়।