বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েনের অবসান? ইউনূস–মোদির আলোচনায় নতুন আশা,

 


ইউনূস–মোদির বৈঠক: আঞ্চলিক কূটনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার?

নবজাগরণ ডেস্ক | 


আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে। তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, আস্থার সংকট ও আঞ্চলিক জটিলতা অনেক সময় এই সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করেছে। ঠিক এমন এক সময়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বহুল আলোচিত বৈঠক যেন নতুন আলোর রেখা টেনে দিল।

এই বৈঠক শুধু দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রনেতার সৌজন্য বিনিময় নয়—বরং এটি একটি গভীর বার্তা বহন করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ইউনূসের রাজনৈতিক আবির্ভাব এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের উচ্চপর্যায়ের সম্পৃক্ততা, আঞ্চলিক কূটনীতিতে নতুন ধারা সূচিত করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

পরিবর্তনের সুর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই বৈঠককে দেখছেন আশার আলো হিসেবে। ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি বলেন, বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর মতে, দুই দেশের নেতৃত্বের এই উদ্যোগ পারস্পরিক তিক্ততার বরফ গলিয়ে সহযোগিতার নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারে।


অভ্যুত্থানের পর প্রথম কূটনৈতিক স্পর্শ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হলো। এটি কেবল কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং ভাঙা বিশ্বাস পুনর্গঠনের সম্ভাব্য সূচনা।

কী বলছে বিশ্লেষণ?

আঞ্চলিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক শুধু বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত মানচিত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। ইউনূসের মতো শান্তিতে নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্বের নেতৃত্ব এবং মোদির আঞ্চলিক আধিপত্য—এই দুটি শক্তি মিলিয়ে একটি ইতিবাচক জোট গড়ে তোলা গেলে বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের স্বার্থে তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

মাঠ থেকে রাজনীতি—ঈদ শুভেচ্ছায় অনন্য মিলন

ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজনে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন সাবেক ক্রিকেটার হাবিবুল বাশার সুমন, আমিনুল হক, সাব্বির, এবং ফুটবল তারকা রাহুল, আশরাফুলসহ অনেকেই। ক্রীড়াপ্রেম ও রাজনীতির মিলনমেলায় যেন নতুন আগ্রহ তৈরি হয়—যেখানে দেশের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনায় সবাইকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

কোথায় যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক?

প্রতিবেশী এই দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। কখনও সীমান্তবিরোধ, কখনও পানিবণ্টন, আবার কখনও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে একে অপরের ভূমিকা নিয়ে দ্বন্দ্ব—সব মিলিয়ে সম্পর্কটা ছিল টান টান উত্তেজনার মধ্যে। ইউনূস–মোদির এই বৈঠক যদি আন্তরিকতার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি করতে পারে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতার এক নতুন ইতিহাস রচনা হতে পারে।

Previous Post Next Post