বাংলাদেশের প্রথম! চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন চালু:

 


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন চালু: গবেষণা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত: 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আজ একটি যুগান্তকারী স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন চালু হয়েছে, যা বাংলাদেশের গবেষণা, দুর্যোগ পূর্বাভাস ও সমুদ্রবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে। এই স্টেশনের মাধ্যমে ১১টি আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইটের সরাসরি সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্লেষণ, সমুদ্রের গতিবিধি ট্র্যাকিং এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করবে।  

প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে প্রথম:  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এমন একটি উচ্চপ্রযুক্তির গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করেছে। চীনের শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেকেন্ড ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফি (SIO) এই প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। বুধবার এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শফি উদ্দিন আহমেদ স্টেশনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।  

কী কী সুবিধা আসছে?  

- দ্রুত দুর্যোগ পূর্বাভাস: ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহ করা যাবে।  

- উন্নত সমুদ্র গবেষণা: বঙ্গোপসাগরের গতিবিধি, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা ত্বরান্বিত হবে।  

- বিশাল ডেটা স্টোরেজ: ২২৪ টেরাবাইট ডেটা সংরক্ষণের ক্ষমতা থাকায় গবেষকরা বিশাল পরিমাণ স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারবেন।  

- আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: বিশ্বের বিভিন্ন স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের সঙ্গে এই স্টেশন যুক্ত থাকায় বৈশ্বিক গবেষণা প্রকল্পগুলিতে অংশ নেওয়া সহজ হবে।  



গবেষকদের প্রত্যাশা:

প্রকল্পের সমন্বয়ক ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন বলেন, “এখন থেকে আমরা নাসা বা ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল থাকব না। আমাদের নিজস্ব স্টেশন থেকে সরাসরি ডেটা সংগ্রহ করে গবেষণা চালানো সম্ভব হবে।”  

অন্যদিকে, অধ্যাপক ড. অহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, “এই স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য শুধু চবি নয়, সারাদেশের গবেষকরা ব্যবহার করতে পারবেন, যা জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” 

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:

এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন নিজস্ব স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, কৃষি উৎপাদন এবং সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষ হয়ে উঠতে পারবে। আগামী দিনগুলিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র ও নীতিনির্ধারণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী।  

শেষ কথায়:  

এই স্টেশন শুধু একটি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, এটি বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও গবেষণার ক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার একটি মাইলফলক। এখন দেখার বিষয়, কীভাবে এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দেশের তরুণ গবেষকরা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবেন।  

📡 **#স্যাটেলাইট_গ্রাউন্ড_স্টেশন #চট্টগ্রাম_বিশ্ববিদ্যালয় #গবেষণার_নতুন_দিগন্ত

Previous Post Next Post